সর্বনিম্ন ৫৫০ গ্রাম ওজনের প্রিম্যাচিউর শিশুর চিকিৎসা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকগন। শিশুটি মাত্র ২৫ সপ্তাহ ৪ দিনের গর্ভকালীন অবস্থায় ৫৫০ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এরপর ৩ মাস ২৬ দিন হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে (১৬ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়।
এ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, এভারকেয়ার হাসপাতাল তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে কম ওজনের প্রিম্যাচিউর শিশুর জীবন বাঁচানোর নজির স্থাপন করেছে। শিশুটি মাত্র ২৫ সপ্তাহ ৪ দিনের গর্ভকালীন অবস্থায় ৫৫০ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে এবং ৩ মাস ২৬ দিন হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটে থাকার পর হাসপাতাল ত্যাগ করেছে।
এভারকেয়ারের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নাসরিন জুলফিকারের তত্ত্বাবধানে সিজারিয়ান সেকশনে শিশুটির জন্ম হয়। শিশুটির মায়ের প্রি-ইক্লাম্পসিয়া রোগের কারণে ভ্রূণের রক্ত প্রবাহকে ক্ষতিগ্রস্ত করছিল, সেজন্য জরুরি ভিত্তিতে শিশুটিকে জন্ম দেওয়া হয়। গর্ভাবস্থা চলতে থাকলে মা ও শিশুর উচ্চ মৃত্যু ঝুঁকি ছিল। জন্মের পর, শিশুটিকে নবজাতক ইউনিটে ভর্তি করা হয় এবং পেডিয়াট্রিকস এবং নিওনাটোলজির সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ ইকবাল তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
চিকিৎসায় নেওয়া উদ্যোগের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শিশুটির প্রিম্যাচিউর অবস্থার কারণে তার ইনকিউবেটর কেয়ার, ভেন্টিলেটর লাইফ সাপোর্ট, সঠিক পুষ্টি, ইলেকট্রোলাইট ব্যবস্থাপনা, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং ২৪ ঘণ্টা নার্সিং কেয়ারের মতো নিবিড় নবজাতক সাপোর্ট প্রয়োজন ছিল। যা যথাযথভাবে নিশ্চিতে এভারকেয়ার কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা করেছে।
এ বিষয়ে ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, এই চ্যালেঞ্জিং যাত্রায় শিশুটির বাবা-মায়ের অসামান্য ধৈর্য, সহযোগিতা ও আমাদের প্রতি আস্থা রাখার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। এমন গুরুতর কেস-এর সাফল্য এভারকেয়ারের সম্পূর্ণ টিম এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। এভারকেয়ারের নিউনেটোলজি টিম প্রিম্যাচিউর শিশুদের জন্য বিশ্বমানের সেবা প্রদানে সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
হাসপাতালের গ্রুপ মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. আরিফ মাহমুদ সফলভাবে শিশুটির চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন করায় ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ ইকবাল, ডা. নুসরাত ফারুক এবং নবজাতক পরিচর্যা দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, এটি আমাদের হাসপাতালের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। বাংলাদেশের রোগীদের নিরাপত্তার প্রতি এটি আমাদের প্রতিশ্রুতি ও নিষ্ঠার প্রতিফলন।