স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম ও অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় মিন্টো রোডে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক বছরে স্বাস্থ্যখাতে অর্জন এবং ভবিষ্যৎ সংস্কার পরিকল্পনা নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন।
ব্রিফিংয়ের শুরুতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম গত এক বছরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কী করেছে, তার বর্ণনা দেন। তার বর্ণনামতে, এই এক বছরে বড় কাজগুলোর মধ্যে আছে: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের দেশে ও বিদেশ চিকিৎসা, বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনে চিকিৎসা করানো, কয়েক হাজার চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ, ৭ হাজার চিকিৎসকের জন্য সুপারনিউমারারি পদ সৃষ্টি, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে দুই পালা চালু, মেডিকেল শিক্ষায় মৌলিক বিষয়ের শিক্ষকদের বেতন ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি, আবার লিভার ও বোনম্যারো প্রতিস্থাপন করার উদ্যোগ, সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ১৯টি হোস্টেল নির্মাণের উদ্যোগ, সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য অভিন্ন নীতিমালা তৈরি।
নূরজাহান বেগম আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়ার সময় নির্দলীয়, সৎ ও দক্ষ মানুষ পাওয়া কঠিন। ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের পদে, চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদে বা বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক পদে নিয়োগের সময় এটা দেখা গেছে।
অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজসহ বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে, মতামত নিয়ে মনে হয়েছে, স্বাস্থ্য খাতের সমস্যা, রোগ বা চ্যালেঞ্জ মূলত ১০টি। এগুলো হচ্ছে: বর্তমান স্বাস্থ্যব্যবস্থা মেধা, জ্ঞান ও যোগ্যতাবিচ্ছিন্ন; এই ব্যবস্থা অতিকেন্দ্রীভূত; এই ব্যবস্থায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা উপেক্ষিত, বিশেষায়িত সেবায় উৎসাহী; এখানে স্বচ্ছতার অভাব আছে ও দায়মুক্তির সংস্কৃতি অত্যন্ত প্রবল; এখানে কাজ করেন উৎসাহ ও মনোবলহীন জনবল; আছে মনন ও মানসিকতার সংকট; এই খাতে নৈতিকতার অবক্ষয় ও স্বাস্থ্যের দ্বন্দ্ব প্রবল; আছে পরনির্ভরশীলতা; এখানে নেতৃত্ব দুর্বল এবং চলছে বরাদ্দের ঘাটতির সঙ্গে পরিকল্পনাহীনভাবে।