News Report In Details

#45. পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহ ৯টি বিরল রোগ, আধুনিক চিকিৎসাও হার মানে যাদের কাছে

1 month, 1 week ago

ইফ্ফাত তাসনিম ইফতি

ডেলটা মেডিকেল কলেজ

সেশন: ২০২০-২১

আজকের দিনে সবচেয়ে ভয়াবহ রোগ কি?

প্রশ্ন শোনামাত্রই প্রথমেই আপনার মাথায় আসবে এইডস বা ক্যান্সারের নাম। এগুলোতে আছেই। এর পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে উত্তরোত্তর বাড়ছে কয়েকটি বিশেষ ধরনের রোগের প্রকোপ। 

এইরকম ভয়াবহ ৯ টি রোগ ও তাদের বিভিন্ন সিন্ড্রোমের কথায় আলোচনা করব। 

এই বিশেষ রোগগুলি যে শুধু বিরল তাই নয় রয়েছে সুদূরপ্রসারী প্রভাবও । এমনকি এই রোগগুলির প্রতিশোধকও রয়েছে আমাদের আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রের নাগালের বাইরে।

(১) প্রোজেরিয়া

বিশ্বের প্রতি ৮ মিলিয়ন শিশুর মধ্যে একজন এই রোগে আক্রান্ত হয়। এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের দেহে শৈশবেই বার্ধক্যের ছাপ চলে আসে। ঠিক যেমনটা দেখা গিয়েছিলো বলিউডের বিখ্যাত মুভি ‘পা’ তে।

(২) পানির প্রতি এলার্জি

এটিও খুব বিরল রোগ ও এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০ জন রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যারা এই ‘ওয়াটার এলার্জি’তে আক্রান্ত। এটি সাধারণত পরিণত নারীদের ক্ষেত্রেই সন্তান জন্ম দেয়ার সময় দেহের হরমোনের তারতম্যের কারণে নারীরা এটিতে আক্রান্ত হন। পানিতে উপস্থিত আয়রনকেই এই বিশেষ প্রকার রোগের মূল কারণ হিসেবে ধরা হয়।

(৩) কুরু

কুরু মূলত নিউ গিনির উপজাতীয় জনগোষ্ঠীদের মধ্যেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এই রোগের লক্ষণ হলো হঠাৎ করেই অট্টহাসিতে ফেটে পড়া। এর ফলে মস্তিষ্কে ছিদ্র হয়ে যায় ও সেই ব্যক্তি মারা যায়। রোগটি মূলত নরমাংস খাওয়ার ফলে তৈরি হয়।

(৪) পরফাইরিয়া

ইংল্যান্ডের রাজা তৃতীয় জর্জ এই বিশেষ রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এ রোগে আক্রান্ত হলে মল ও মূত্রের রঙ বেগুনি হয়ে যায়। এটা হয় মূলত রক্তের লোহিত কণিকা থেকে প্রোটিন তৈরিতে সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার কারণে।

(৫) Fatal familial insomnia(FFI): ভয়াবহ এক অনিদ্রা রোগ।এটি একটি জেনেটিক রোগ ও পুরো বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত ৪০ টি পরিবারের সন্ধান মিলেছে যারা এই বিরল রোগে আক্রান্ত। এ রোগে একটি ইতালীয় পরিবারের সব সদস্য না ঘুমাতে ঘুমাতে এক সময় মারা যায়।

(৬) এলিয়েন হ্যান্ড সিন্ড্রোম:

এই সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তির হাত অস্বাভাবিকভাবে নড়তে থাকে। আক্রান্ত ব্যক্তির তার হাতের ওপর সব নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে । হাতটি দেখে যে কারোই মনে হবে এটি যেন নিজেই আলাদা একটি জীবিত সত্ত্বা!১৯০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র ৪০ থেকে ৫০ জন ব্যক্তিকে পাওয়া গিয়েছে যারা এই বিরল রোগে আক্রান্ত ছিল।

(৭) বৃক্ষমানব

আক্রান্ত রোগীর ত্বকের উপর হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বংশবৃদ্ধি করতে শুরু করে। শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় আগে থেকেই রোগী দুর্বল হয়ে থাকে। এই সুযোগে ভাইরাসটি রোগীর দেহের সব স্থানের ত্বকে ছড়িয়ে পড়ে। ধীরে রোগীর ত্বক গাছের বাকলের মত হয়ে যায়।

(৮) হাইপারট্রিকোসিস

এটি মূলত দেহে হরমোনের তারতম্যের কারণেই হয়। এর ফলে দেহে অস্বাভাবিকভাবে চুল গজাতে থাকে। ফলে আক্রান্ত রোগীর দেহ অনেকটা নেকড়ে বা উলফের মত হয়ে যায়।

(৯) আরজিরিয়া বা নীল ত্বক

ফুগেট পরিবার গত ২০০ বছর ধরে এই সমস্যায় আক্রান্ত। বংশ পরম্পরায় এই রোগ এই পরিবারের সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে যার ফলে এদের সবার দেহের রঙ নীল বা বেগুনি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে methemoglobinemia