News Report In Details

#34. ঢাকা মেডিকেল কলেজে অতিথি হয়ে গিয়ে অবরুদ্ধ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন

2 months ago

নিজস্ব প্রতিবেদক।। ৯ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার।।   

খাজা ইউনুস আলি মেডিকেল কলেজ।                      সেশন: ২০২১-২২

পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. মোস্তাক আহমেদকে অবরুদ্ধ করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ঢামেকের ডা. মিলন হলে এক সেমিনারে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হলে তিনি অবরুদ্ধ হন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি ঢামেক ত্যাগ করতে পারেননি।

রাত আটটার দিকে ঢামেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা অবরুদ্ধ করে রাখেননি। দীর্ঘদিন ডিনের কার্যালয়ে গিয়ে সাক্ষাৎ না পাওয়ায় অনুষ্ঠানে তার কাছে নিজেদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরেছেন।

জানা গেছে, ৮ এপ্রিল দুপুরে মিলন হলে বিশ্ব শরীরচর্চা দিবস উপলক্ষে ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ আয়োজিত সেমিনারে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. মোস্তাক আহমেদ। পরে বেলা আনুমানিক তিনটার দিকে বেশিরভাগ অতিথি চলে গেলেও অধ্যাপক মোস্তাক আহমদেকে ঘিরে ধরেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় নিজেদের ফাইনাল পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানান তারা।

২০১৯-২০ সেশনের একাধিক শিক্ষার্থী মেডিভয়েসকে বলেন, ‘আমাদের ১৮ মাসের একটি কোর্স, মাত্র ১১ মাস হয়েছে। এ অবস্থায় পরীক্ষার রুটিন দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ মে পরীক্ষা শুরু হবে। এমনিতে কোর্স ডিউরেশন স্বল্পতা, অপরদিকে কোটা আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের কারণে পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে যেতে হয়েছে। এ অবস্থায় পরীক্ষায় বসার জন্য আমরা পর্যাপ্ত প্রস্তুত নই।’

তারা আরও বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে জুন অথবা জুলাই মাসে আমাদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু ২০১৮-১৯ সেশনের চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সাপ্লিমেন্টারি নিয়ে তালবাহানার অংশ হিসেবে আমাদের পরীক্ষা এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। ডিন কার্যালয় ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার আয়োজন করতে চায় না। চায় আমাদের সাথে তাদের পরীক্ষায় বসাতে। এ জন্য অযাচিতভাবে আমাদের পরীক্ষা এগিয়ে নিয়ে এসেছে।’

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘মে মাসে আমাদের অন্যান্য পরীক্ষা রয়েছে। এ অবস্থায় একাধিক পরীক্ষা কিভাবে দিব? তারা আমাদের সাথে কোন আলোচনা না করেই এ সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে। ডিন স্যার চাইলেই আমাদের দাবি মেনে নিতে পারেন, কিন্তু মানছেন না। আমরা সব জায়গায় গিয়েছি, স্মারকলিপি দিয়েছি। সেসব জায়গা থেকে বলছে, আপনাদের প্রশাসন এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিবে। অথচ ডিন বলছেন, তার হাতে ক্ষমতা নেই, মন্ত্রণালয়ের চাপ আছে। বলেন, তোমরা অন্যান্যদের সাথে কথ বলো।’

তারা আরও বলেন, ‘গত মার্চ মাসের শেষ দিকে হঠাৎ করে এ রুটিন দেওয়া হয়। এরপর থেকে পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে আমরা বারবার ডিনের সঙ্গে দেখা করতে চাই। কিন্তু আমাদের সঙ্গে তিনি দেখা করছিলেন না। আজ সেমিনারে তাকে পেয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবি তুলে ধরেছে। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন। কিন্তু তিনি চলে যেতে চাইছেন আর আমরা আটকে রেখেছি—এমন কিছু ঘটেনি।’

সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, অধ্যাপক ডা. মোস্তাক আহমেদ শিক্ষার্থীদের সাথে দফায় দফায় আলোচনায় বসেছেন। একই সাথে বিভিন্ন অংশীজনের সাথেও আলোচনা করছেন তিনি। তবে এ পর্যন্ত কোনো সমাধান মেলেনি।

এ বিষয়ে ডিন অধ্যাপক ডা. মোস্তাক আহমেদের সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ঢামেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আলমকে ফোন দেওয়া হলে তিনি কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি অবরুদ্ধ কিনা—এমন প্রশ্ন করা হলে ‘আমরা অবরুদ্ধ নই। তবে ডিন এখনও অবরুদ্ধ রয়েছেন’ বলে সংযোগ কেটে দেন তিনি।